Prohelika by Aniruddha Bose, Translated by Partha Mukhopadhyay


by Aniruddha Bose , Translated by Partha Mukhopadhyay
Murder Thriller (Translation), Bengali
Hardbound, 272 Pages, 450 gms
About: Prohelika, Aniruddha, Bose, Thriller, Mathematics, Science, Scientific, Murder, Suspense, Numbers, Prohelika, Conundrum
বাংলায় হুডানিট গোছের রহস্য উপন্যাস বা গল্পের জন্ম ঢের আগে হলেও থ্রিলারধর্মী গল্প-উপন্যাসের সম্ভার খুব বেশিদিন জায়গা করে নিতে পারেনি। গত শতকের ছয় বা আরেকটু পিছোলে বড় জোর পাঁচের দশকে এই জঁরের কাহিনিমালা আস্তে আস্তে বাঙালি লেখকদের নজর টানতে শুরু করে। প্রবল গতিময় এইসব লেখা তখন যাঁরা লিখতে চেষ্টা করছিলেন তাঁদের সামনে সবথেকে বড় সমস্যা ছিল প্রধানত চোখে পড়ার মতো ওঠাপড়াহীন নিস্তরঙ্গ বাঙালি জনজীবন। ফলে, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলুন বা নীহাররঞ্জন গুপ্তদের মতো প্রবল জনপ্রিয় লেখক থাকা সত্বেও বাংলায় জেমস হেডলি চেজ, ডেসমন্ড ব্যাগলি বা ফ্রেডরিক ফরসাইথদের দেখা পাঠক পাননি। তখন তাই আমাদের সাধ মেটাতে হত এই ধারার বিদেশি লেখকদের লেখার কিছু প্রায়-অক্ষম বাংলা অনুবাদ বা তাঁদের ছায়া অবলম্বনেই নিঃসন্দেহে কিন্তু বাহ্যত কিছু আপাত-সিরিয়াস অথচ চরিত্রে মূলত পাল্প ঘরানার লেখাপত্র গোগ্রাসে গিলে। ‘রোমাঞ্চ’ বা ‘রহস্য পত্রিকা’ গোছের সাময়িকীগুলো তখন সবে বাজারে আসতে শুরু করেই আম-পাঠকদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। শহর-মফস্বলে তখনো রমরম করে চলতে থাকা লাইব্রেরির বইয়ের ক্যাটালগ ঘাঁটলে এসবের সাক্ষাৎ আজও মিললেও মিলতে পারে।
অবস্থার ভেতরে ভেতরে হলেও বদল ঘটতে শুরু করেছিল মোটামুটি আটের শেষ বা নয়ের দশকের গোড়া থেকে। এবং তার স্পষ্ট অভিঘাত টের পাওয়া যেতে থাকল একুশ শতকে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে। আন্তর্জালিক দুনিয়া বাঙালি পাঠককে এনে দাঁড় করিয়ে দিল ক্রম-পরিবর্তমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতের ঠিক মধ্যিখানে। মানসিকতায় বিশ্বগ্রামের বাসিন্দা হয়ত তখনো হতে পারিনি পুরোপুরি, তবু আমাদের ভাবনা তথা দৃষ্টিকোণের ক্ষেত্রে তখন কিন্তু ঘটে যাচ্ছে বিপুল রদবদল। জীবনকে দেখার চোখটাই যেমন তখন বদলে যাচ্ছিল ভেতরে-বাইরে, বিভিন্ন চাপের মুখে পড়ে, তেমনি পুরোনো মূল্যবোধগুলোও একই সঙ্গে সম্মুখীন হচ্ছিল নানা প্রশ্নের, চ্যালেঞ্জের। সব থেকে বড় কথা , ভাঙতে ভাঙতে এতদিনে এসে টের পাওয়া যাচ্ছিল যৌথ পরিবার-ভিত্তিক মানসিকতার গড়নটাই কীভাবে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত; কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নতুন কোনো আঁকড়ে ধরার মতো মনো-সামাজিক অবলম্বন মিলছিল না যেহেতু, ফলে সামাজিক উপরিকাঠামোর চেহারাটাই যত দিন যাচ্ছিল হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বেশ খানিকটা বকচ্ছপ গোছের। এবং বাড়তি মজাটা হল, এর মধ্যেই যেহেতু রক্তের ভেতরে শিকড় গেড়ে থাকা আদ্যন্ত বাঙালি মূল্যবোধকেও টিঁকে থাকার জন্যে অবলম্বন খুঁজতে হচ্ছিল প্রাণপণে, ফলে উপরে উপরে আপাত-ঘটনাহীন জনজীবনের চেহারাটা হয়ত বজায় থাকছিল ঠিকই, কিন্তু তার গড়ন টোল খাচ্ছিল বিস্তর।
ডাঃ অনিরুদ্ধ বসুর পঞ্চম থ্রিলার ‘কোনানড্রাম’-এর অনুবাদ ‘প্রহেলিকা’-র ভূমিকায় অনুবাদকের তরফে এতগুলো কথা বলে নেওয়া দরকার হল একটাই কারণে যে, এর বৈশিষ্ট্য। ডাঃ বসু তাঁর এই লেখায় চেয়েছেন মূলত পাঠককে এই একুশ শতকে এসেও সতত-বদলে যেতে থাকা আধুনিক বাঙালি মেগালোপলিসের মনো-বাস্তবিক সংঘাতগুলোর ঠিক মধ্যিখানে হিঁচড়ে এনে দাঁড় করিয়ে দিতে।
‘কোনানড্রাম’-এ যাকে ঘিরে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেছে, যে সেই ঘটনাগুলি ঘটিয়েছে ও যে জন্যে ঘটিয়েছে তারা কেউ/ কোনোটিই অ-সাধারণ নয়। এমনকী এই থ্রিলারের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি একদম আর-পাঁচজনের মতোই সাধারণ এক বুদ্ধিমান বাঙালি যুবক, যে নিজের পরিসংখ্যানবিদের পেশায় যথেষ্ট সফল। এবং একই সঙ্গে আধুনিক সময়ের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য উচ্চাকাঙ্ক্ষারও শিকারও বটে। তাকে কে বা কারা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নির্বিকারভাবে এই খুনগুলো করে চলেছে সেটা নিয়েই উপন্যাস - যার শেষে এসে লেখক পাঠককেও প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবেন যে, আমাদের এই যে আইন ব্যবস্থার মূল ভিৎ, এইটাই বা অপরাধী শনাক্তকরণে কতটা যৌক্তিক! বাকি চরিত্রগুলির কেউও অ-সাধারণ তো নয়ই এমনকী একটি চরিত্র বিকাশ তো পেশায় পুলিশ হয়েও মোটেই আপনার-আমার থেকে বিরাট কিছু বুদ্ধিমান/ শক্তিমান নয়। দোষেগুণে মেশানো মানুষ হিসাবে প্রায়ই সে এমন সব কাণ্ড ঘটিয়ে বসে যা তাকে প্রায় হাস্যাস্পদ করে ছাড়ে। ‘কোনানড্রাম’-এ ভিড় এইসব অ্যাভারেজদেরই, আপনার-আমার মতোই যারা কিছুতেই নিজেদের গণ্ডি ভেঙে বেরোবার সাহস ধরে না তো বটেই, বেরোতে কিছুটা চায়ও না। এইসব অ্যাভারেজ মানুষগুলোর স্বার্থের দ্বন্দ্বই একদিকে যেমন এ লেখার প্রাণ তেমনি এ উপন্যাসের অন্তর্নিহিত প্রহেলিকারও কেন্দ্রভূমি --- যা শেষ পর্যন্ত পাঠককে এনে দাঁড় করিয়ে দেয় নীতির তথা নৈতিকতার প্রশ্নের মুখোমুখি।
‘কোনানড্রাম’ পাঠককে আরো যে জায়গাটায় পাঠককে চমকে দেয় সেটা হল লেখকের নির্বিকার ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট দৃষ্টি তথা লিখন ভঙ্গি। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি আমাদের এই আধুনিক মেগালোপলিসের মনকে দেখেছেন, এবং পরতে পরতে মেলে ধরে আমাদেরও দেখিয়েছেন। নিপুণ যে ভাষাভঙ্গিতে এখানে কাহিনিকে বোনা হয়েছে তা অনুবাদে প্রাণপণ চেষ্টাতেও শেষ পর্যন্ত ঠিক কতটা ধরা গেল তা বলবেন পাঠকেরা। অনুবাদে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন বন্ধু অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। আলাদা করে তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট না-ই বা করলাম।
সেপ্টেম্বর ২০১৯ পার্থ মুখোপাধ্যায়
Publications of Aniruddha Bose:
Reviews
Prohelika Launch
-by You Tube | 01-Dec-2019
বিশিষ্ট প্ল্যাস্টিক সার্জেন বন্ধু অনিরুদ্ধ বোস একজন প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক। বাংলা এবং ইংরাজি সাহিত্য রচনায় সে সমান দক্ষ। নয় নয় করে তার প্রায় ২৫টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলিই বেস্ট সেলারের তকমা পেয়েছে। কিন্তু তার সম্প্রতি প্রকাশিত ‘প্রহেলিকা’ রহস্য-উপন্যাসটি পড়ে চমকিয়ে গিয়েছি। রহস্যকাহিনী কিম্বা গোয়েন্দা গল্পের আকর্ষণ পাঠক সমাজের কাছে দুর্নিবার। কিন্তু অনিরুদ্ধ গতানুগতিক ছক ভেঙ্গে একেবারে অন্য ধারায় তার কাহিনী পরিবেশেন করেছে, যার পরতে পরতে বিস্ময় আর উৎকণ্ঠা। খুন ও খুনের ধরণ, খুনির মানসিক অবস্থান, প্রয়োগ-বিজ্ঞানে তার তুখোড় বুদ্ধির কাছে নাজেহাল হতে হয় ধুরন্ধর পুলিশ বিভাগকে। খুনির উদ্ধত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় হিমসিম খায় সুমিত। প্রথম থেকে শেষ ২৭২ পাতা পর্যন্ত বুদ্ধি আর ধাঁধার মায়াজাল পাঠককে আবিষ্ট করে রাখবেই।
স্মৃতি পাবলিশার্স
দাম ৩০০ টাকা
-by Purnendu Bikash Sarkar, Eye Surgeon | 24-Dec-2019
Comments